প্রবন্ধ

চিত্রকলার প্রকৃত সুলতান

ড. আফরোজা পারভীন

এস এম সুলতানের পুরো নাম শেখ মোহাম্মদ সুলতান। সুলতান নামেই পরিচিত। ডাক নাম লালমিয়া। তিনি একজন বড় চিত্রকর। আড়ালচারী, ক্ষণজন্মা। তার শিল্পচেতনায় মূল উপজীব্য ছিল স্বদেশ-ঐতিহ্য, প্রকৃতি-পরিবেশ ও মানুষ। তিনি বিশ্বাস করতেন—মানুষ শক্তিময়তার দিক থেকে অনেক বড়। সব শক্তির আধার। তাদের অস্থি-মজ্জায় পুঞ্জীভূত অঢেল প্রাণরস। এ ভাবনার পরিচয় মেলে সুলতানের সৃষ্টি করা ক্যানভাসে। তার ছবিতে কখনো কৃশকায় মানুষ দেখা যায় না, দেখা যায় পেশিবহুল স্বাস্থ্যবান অবয়ব। কেন, সে জিজ্ঞাসার জবাব তার নিজের জীবন।

১৯২৩ সালের ১০ আগস্ট চিত্রা নদীবিধৌত তেভাগা আর নীলবিদ্রোহের স্মৃতিধন্য নড়াইলের মাছিমদিয়া গ্রামে জন্ম সুলতানের। মাছিমদিয়ায় কয়েকটি পরিবার নিয়ে গড়ে উঠেছে ধাউড়িয়া বাড়ি। ধাওড়িয়া বাড়ির মেছের নড়াইলের জমিদার বাড়িতে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। আয় করেন সামান্য। স্ত্রী, ছেলে লালমিয়া ও মেয়ে ফুলমণিকে নিয়ে চারজনের সংসার। অভাব-অনটন লেগেই আছে এ সংসারে। মেছেরের একার উপার্জনে চলে এ সংসার। লালমিয়া ও ফুলমণিকে রেখে মেছেরের স্ত্রী হঠাৎ মারা যান। মেছের দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সংসারের অভাবের যন্ত্রণার সঙ্গে যোগ হয় লালমিয়ার ওপর সৎ মায়ের অত্যাচার।

প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা দেওয়ার সামর্থ্য না থাকা সত্ত্বেও বাবা ১৯২৮ সালে তাকে নড়াইলের ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি করে দেন। পাঁচ বছর চলে সে শিক্ষা। কিন্তু আর দশটা ছেলেমেয়ের মতো নিরবচ্ছিন্নভাবে পড়াশোনা করার সৌভাগ্য হয়নি সুলতানের। ছেলেবেলাতেই বাবার সঙ্গে রাজমিস্ত্রির কাজ শুরু করেন। জীবনের শুরুতেই তাকে পেশিতে নির্ভর করে নির্বাহ করতে হয়েছে জীবিকা। লড়াই করতে হয়েছে দৈনন্দিন দারিদ্র্যের সঙ্গে। এ লড়াইয়ের জন্য কোমল পেশিতে সঞ্চার করতে হয়েছে শক্তি ও সাহস। পরে তিনি যে মানুষকে শক্তিমান ও মহীয়ান করে চিত্রিত করেছেন, তা নিছক শিল্প নয়, ঘনিষ্ঠ জীবনবোধ ও সমাজ বাস্তবতার বহিঃপ্রকাশ। কেন তার পুরুষরা পেশিবহুল, নারীরা শক্তিমত্ত- সে প্রশ্নেরও জবাব।

আর সে কারণেই জীবনবাদী শিল্পী সুলতান বলেন, ‘আমি আমার বিশ্বাসের কথা বলছি। আমার সব চিন্তা, সবটুকু মেধা, সবটুকুশ্রম দিয়ে যা কিছু নির্মাণ করি, তা শুধু মানুষের জন্য, জীবনের জন্য, সুন্দর থেকে সুন্দরতম অবস্থায় এগিয়ে যাওয়ার জন্য। আমার ছবির মানুষরা, এরা তো মাটির মানুষ, মাটির সঙ্গে স্ট্রাগল করেই এরা বেঁচে থাকে। এদের শরীর যদি শুকনো থাকে, মনটা রোগা হয়, তাহলে এই যে কোটি কোটি টন মানুষের জীবনের প্রয়োজনীয় বস্তু সব আসে কোত্থেকে? ওদের হাতেই তো এসবের জন্ম। শুকনো, শক্তিহীন শরীর হলে মাটির নিচে লাঙলটাই দাববে না এক ইঞ্চি।’

কষ্টে চলছিল লালমিয়ার পড়াশোনা, বাবার কাজে সহযোগিতা আর বাঁশি বাজানো। নড়াইলের জমিদার বাড়ির পুকুরঘাট, স্কুলের অনুষ্ঠান ছাড়াও বনবাদাড়ে ঘুরে ঘুরে বাঁশি বাজাতেন তিনি। লালমিয়ার বাঁশি বাজানোর সুখ্যাতি ছিল দিকে দিকে। এমন কথাও শোনা গেছে, জমিদার বাড়ির পুকুরঘাটে লালমিয়া বাঁশি বাজানোর সময় কালো কেউটে সাপ দুই পাশে নাচত।

এস এম সুলতান কৃষক পুরুষের শরীরকে করেছেন পেশিবহুল এবং বলশালী, কৃষক রমণীর শরীরকে এঁকেছেন সুডৌল ও সুঠাম গড়নে

বাবাকে সহযোগিতা করার জন্য প্রায়ই নড়াইলের জমিদার বাড়ি যেতেন সুলতান। কাজের ফাঁকে ফাঁকে দালানের ছবি আঁকতেন। জমিদার ধীরেন্দ্রনাথ রায়বাহাদুর ও তার শিল্পরসিক ছোট ভাই লালমিয়ার ছবি আঁকার নেশার কথা জানতেন। সুলতানের ইচ্ছা ছিল কলকাতায় গিয়ে ছবি আঁকা শেখার। কিন্তু আর্থিক অসংগতি সে ইচ্ছার পথে ছিল বড় বাধা।

সৎমায়ের সঙ্গে রাগারাগি করে ১৯৩৮ সালে কলকাতায় যান তিনি। ওঠেন ধীরেন্দ্রনাথ রায়ের বাড়িতে। এক দিন ধীরেন্দ্রনাথ রায় লালমিয়াকে বিলেত থেকে ছবি আঁকার ওপর বিভিন্ন স্কেচের দুটো বই এনে দিয়ে বললেন, ‘লালমিয়া, যদি ভালো করে ছবি আঁকা শিখতে চাস, তাহলে তোকে এই প্রাথমিক বিদ্যেগুলো শিখতে হবে।’ বই দুটো হাতে পাওয়ার পর ধীরে ধীরে ছবি আঁকায় আরো দক্ষ হয়ে ওঠেন লালমিয়া। জমিদারের ছোট ভাই এক দিন লালমিয়াকে ডেকে নিয়ে বললেন, ‘দেখো লালমিয়া, তুমি যদি বড় শিল্পী হতে চাও, তাহলে তোমাকে ভালো শিক্ষকের কাছে ছবি আঁকা শিখতে হবে। তার মানে, তোমাকে আর্ট স্কুলে বা কলেজে ভর্তি হতে হবে। তার আগে তোমাকে ইন্টারভিউ দিতে হবে এবং ইন্টারভিউ দিয়ে পাসও করতে হবে।’

সে সময় কলকাতা আর্ট কলেজে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য অন্তত এন্ট্রান্স (মেট্রিক) পাসের প্রয়োজন হতো। সে যোগ্যতা লালমিয়ার ছিল না। লালমিয়ার আর্ট কলেজে পরীক্ষা দেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়লে জমিদার বাবু বললেন, ‘একটা উপায় অবশ্য আছে। শাহেদ সোহরাওয়ার্দীকে ধরতে হবে। তিনি এই কলেজের ভর্তি কমিটির সদস্য। তিনি বলে দিলে আর কোনো সমস্যা থাকবে না।’

ঠিকানা নিয়ে শাহেদ সোহরাওয়ার্দীর বাড়িতে যান লালমিয়া। তিনি সোহরাওয়ার্দীর কাছে বিষয়টা অকপটে খুলে বললেন। সোহরাওয়ার্দী তাকে বাড়ির ভেতর নিয়ে একটি ঘর দেখিয়ে বললেন, ‘ওই ঘরের খাটে যিনি বসে আছেন তাকে তুই মা বলে ডাকবি।’ ওই মহিলা সোহরাওয়ার্দীর চাচি, নিঃসন্তান। লালমিয়া ঘরে ঢুকে দেখলেন, বিশাল খাটের ধবধবে বিছানার ওপর সোনার গহনা পরা প্রৌঢ়া এক সুন্দরী নারী বসে আছেন। লালমিয়া সোহরাওয়ার্দীর কথামতো তাকে ‘মা’ বলে ডাকলেন। খাট থেকে নেমে এসে লালমিয়াকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন তিনি।

এরপর আর্ট কলেজে ভর্তি হতে কোনো সমস্যাই হয়নি লালমিয়ার। ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হয়ে ১৯৪১ সালে আর্ট কলেজে ভর্তি হলেন। শাহেদ সোহরাওয়ার্দীর বাড়িতেই থাকতেন। শাহেদ সোহরাওয়ার্দীর ছিলেন আর্টের অসাধারণ সমঝদার ও সমালোচক। তার বিশাল লাইব্রেরির তত্ত্বাবধায়ক হলেন তিনি। সুলতানকে নিজের ছেলের মতোই ভালোবাসতেন শাহেদ সোহরাওয়ার্দী। লাইব্রেরি জুড়ে ছিল বিশ্ববিখ্যাত সব চিত্রকরের শিল্পকর্ম আর সেরা সেরা সমালোচকের বই-পুস্তক। আরবি, ফারসি ও ইংরেজিতে দক্ষ হয়ে উঠলেন তিনি। সে সময় আর্ট কলেজের কোর্সের মেয়াদ ছিল ছয় বছর। সুলতান প্রথম বছরের পরীক্ষায় দ্বিতীয় এবং পরের দুই বছর পরপর প্রথম হলেন। কিন্তু চার বছরের মাথায় হাঁপিয়ে ওঠেন। জেগে ওঠে তার বোহেমিয়ান সত্তা। বাঁধাধরা লেখাপড়া রীতিনীতি তার অসহ্য লাগে। ১৯৪৪ সাল, মাছিমদিয়ার দুরন্ত লালমিয়া সব স্নেহ-মমতার বন্ধন ছিন্ন করে কলকাতা ছেড়ে বেরিয়ে পড়লেন। প্রথমে দিল্লি­, দিল্লি থেকে লখনৌ, সেখান থেকে হিমালয়ের পাদদেশ। তার ভবঘুরে শিল্পীজীবন কাটতে লাগল ঘুরে ঘুরে। কন্যাকুমারিকা থেকে হিমালয় পর্যন্ত চষে বেড়ান তিনি।

তখন দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ চলছে। ছবি এঁকে আর বিক্রি করে জীবন চলছে। প্রদর্শনী করেছেন। শিল্পী হিসেবে কিছুটা পরিচিতি লাভ করেছেন। সুন্দরের প্রতি সুতীব্র টানে ছুটছেন। কাশ্মীরের উপজাতীয়দের সঙ্গে বসবাস শুরু করলেন। মিসেস হাডসন নামে কানাডীয় এক নারীর উদ্যোগে ১৯৪৫ সালে ভারতের সিমলাতে সুলতানের প্রথম চিত্রপ্রদর্শনী হয়। সেখানকার মহারাজা প্রদর্শনীটির উদ্বোধন করেন। এরপর সুলতান চলে যান পশ্চিম পাকিস্তানে।

দেশ বিভাগের পর সুলতান কিছুদিনের জন্য দেশে ফেরেন। ১৯৫০ সালে চিত্রশিল্পীদের এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য আমেরিকা যান। নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন, শিকাগো, বোস্টন এবং এরপর লন্ডনে তার ছবির প্রদর্শনী হয়। ১৯৫১ সালে আবার করাচি যান। সেখানে পারসি স্কুলে শিল্পশিক্ষক হিসেবে দুবছর কাজ করেন। এ সময় ইসমতচুগতাই ও শাকের আলীর মতো শিল্পীদের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব হয়।

১৯৫৩ সালে নড়াইল ফিরে তিনি শিশুশিক্ষায় মনোনিবেশ করেন। শিশুদের নিয়ে সুলতানের অনেক স্বপ্ন ছিল। শেষ বয়সে নড়াইলে ‘শিশুস্বর্গ’ ও ‘চারুপীঠ’ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে সে স্বপ্নের বাস্তব রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। নড়াইলে তিনি ‘নন্দনকানন’ নামের একটি প্রাইমারি ও একটি হাইস্কুল এবং একটি আর্ট স্কুলপ্রতিষ্ঠা করেন।

মধ্য পঞ্চাশে ঢাকায় আধুনিক চিত্রকলার ক্ষেত্রে অনেক কাজ শুরু হয়। প্রচুর উৎসাহ এবং আগ্রহের সঙ্গে শিল্পীরা শৈলী, ফর্ম, মিডিয়া নিয়ে নতুন নতুন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। তখনো সুলতান রয়ে গেলেন সবার দৃষ্টির আড়ালে, নড়াইলে। মাঝেমধ্যে ঢাকায় আসতেন। কিন্তু তার মন, তার জীবনের মূল সুর বাঁধা ছিল গ্রামীণজীবন, কৃষক ও কৃষিকাজের সঙ্গে। সেখানেই বাঙালির ইতিহাস ও সংস্কৃতি আবিষ্কার করেছিলেন তিনি। বাঙালির দ্রোহ ও প্রতিবাদ, সংগ্রাম এবং নানা প্রতিকূলতার সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকার ইতিহাস এবং অনুপ্রেরণা ছিল সেখানেই। তিনি কৃষক পুরুষের শরীরকে করেছেন পেশিবহুল এবং বলশালী, কৃষক রমণীর শরীরকে এঁকেছেন সুডৌল ও সুঠাম গড়নে, তাকে দিয়েছেন যুগপৎ লাবণ্য এবং শক্তি। সুলতানের ছবিতে পরিপূর্ণতা এবং প্রাণপ্রাচুর্যের পাশাপাশি আছে শ্রেণিদ্বন্দ্ব এবং গ্রামীণ অর্থনীতির কিছু ক্রুর বাস্তবতার চিত্রও। হত্যাযজ্ঞ (১৯৮৭) ও চরদখল (১৯৮৮) এ রকম দুটি ছবি।

১৯৭৬ সাল পর্যন্ত সুলতান শিল্পরসিকদের দৃষ্টির আড়ালেই থেকে যান। মধ্য সত্তরে তার কিছু শুভানুধ্যায়ী তাকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি তার এক প্রদর্শনীর আয়োজন করে। এ প্রদর্শনীই তাকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়।

তার ছবিতে গ্রাম হচ্ছে সৃষ্টির কেন্দ্র, কৃষকই প্রকৃত জীবনশিল্পী। গ্রাম ও গ্রামের মানুষের মধ্যেই তিনি খুঁজেছেন তার সৃষ্টির অনুপ্রেরণা। এজন্য কৃষক ও কৃষকের জীবন কিংবদন্তিতুল্য শক্তি নিয়ে উপস্থিত তার ছবিতে।

তার কাজে অবয়বধর্মিতাই প্রধান। তিনি আধুনিক, বিমূর্ত শিল্পের চর্চা করেননি; তার আধুনিকতা ছিল জীবনের শাশ্বতবোধ ও শিকড়ের শক্তিকে প্রতিষ্ঠা করা। তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন মানুষের ভেতরের শক্তির উত্থানকে, ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই এবং ঔপনিবেশিকোত্তর সংগ্রামের নানা প্রকাশকে তিনি সময়ের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে উপস্থাপনা করেছেন। তার স্টাইলের ক্ষেত্রে তিনি অননুকরণীয়। তার কোনো অনুসারী বা স্কুল নেই, কারণ তার মতো মৃত্তিকা সমর্পিত জীবন আর কোনো শিল্পী যাপন করেননি। সুলতান তেলরং ও জলরঙের ছবি এঁকেছেন, ব্যবহার করেছেন সাধারণ কাগজ, সাধারণ রং ও চটের ক্যানভাস। এজন্য তার অনেক ছবির রং নষ্ট হয়ে গেছে। সেদিকেও তার কোনো ভ্রুক্ষেপ ছিল না।

কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ১৯৮২ সালে তাকে এশিয়ার ব্যক্তিত্ব হিসেবে ঘোষণা করে।

সুলতান আশির দশক থেকে নড়াইলেই বসবাস করেছিলেন। তার কাছে আশ্রয় নেওয়া মানুষ, শিশু এবং জীবজন্তুর প্রতি ভালোবাসায় তার বাড়িটিকে তিনি ছেড়ে দিয়েছিলেন। একটি চিড়িয়াখানা ছিল তার। শিশুদের জন্য একটি বিরাট নৌকাও বানিয়েছিলেন।

শেষজীবনে অসুস্থ সুলতানের আয়ের উৎস ছিল শিল্পকলা একাডেমি থেকে পাওয়া কিছু টাকা আর ছবি বিক্রির টাকা। সেই সময় সুলতানের ছবির কদর অনেক বেশি ছিল। কিন্তু অনেকেই ছবি নিয়ে অথবা বিক্রি করে টাকা দিত না। সে কারণে সংসারে দিন দিন সংকট বাড়তে থাকে। সুলতান দিন-রাত উৎকণ্ঠায় থাকতেন ‘শিশুস্বর্গ’ ও শিশুদের নিয়ে। ইচ্ছে থাকলেও তখন আর ভবঘুরে হতে পারেননি। বিশাল এক সংসারের দায় তখন তার কাঁধে। তা ছাড়া শরীরের ভারেও অনেকটা নত হয়ে পড়েছেন। নব্বইয়ের দশকের শুরুতেই সুলতানের শরীর অনেক ভেঙে পড়েছিল। শেষের দিকে এসে তার শরীর দ্রুত খারাপ হতে শুরু করে।

১৯৮৭ সালে ঢাকার গ্যেটে ইনস্টিটিউটে সুলতানের ছবির একটি প্রদর্শনী হয়। ১৯৯৪ সালে ঢাকার ‘গ্যালারি টোনে’ সুলতানের স্কেচ নিয়ে একক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। এ প্রদর্শনী ছিল সুলতানের জীবনের শেষ প্রদর্শনী। ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর যশোরের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মহান এ শিল্পীর জীবনাবসান ঘটে।

Leave a Comment

বিজ্ঞাপন

সম্পাদক : মীর হেলাল । শিল্প নির্দেশক : বদরুল হায়দার । © 2023 পৌষ
editor@poushh.com । তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা । 01914 441 825