প্রবীণ হয়েছে চেনা পথগুলো আর আমি
তোমার আমার যেই পথে আনাগোনা ছিল
যেই পথে চায়ের কেতলি দেখে থেমে যেতাম
সেই পথগুলো এখন পিচ ঢালাই
রাস্তার পাশে কামিনী গাছগুলোর স্থানে
পল্লী বিদ্যুতের বিশাল বিশাল লম্বা খুঁটি
যেই পথ ধরে নদীর তীরে গিয়েছিলাম
যেই নৌকায় ভেসেছিলাম দুজনে
নৌকাটা অচল, হয়তোবা এতদিনে নৌকাটা কোনো গৃহিণীর জ্বালানি হয়েছে।
যেই মাঝি গান ধরেছিল মাঝিটি উর্বর সার হয়েছে
হয়তোবা মাটির সাথে তার বসবাস
যেই হিজল গাছটির নিচে তোমার আঁচল বিছিয়ে
আমরা দুজন কিছুক্ষণ বসেছিলাম
হিজল গাছটি হয়তোবা এখন অনেক দিন-রাতের সাক্ষী
আমার গলার মাফলারটা তোমাকে দিয়েছিলাম
তোমার পরনে ছিল নেভি ব্লু জামা
আমার পরনে সাদা শার্ট
নৌকার একপাশে দুলনার ভয়ে দৌড়ে অন্য পাশে যেতাম
তোমার পিঠের সাথে হেলান দিয়ে শীতলক্ষার লজ্জাটা দেখতাম
নদী কথা বলতো ছুঁয়ে দিলে হাসতো
তোমার হাতটি ধরে মুখশ্রীতে মেখে নিতাম নদীর জল
তুমি বলতে সাবধান;
প্রেয়সীরা এইরকমই হয় যদি প্রেম কাদে সেই ভয়ে
রৌদ্রের উজ্জলতায় কখনো মিষ্টি কখনো ভারত্ব কখনো বিরক্ত
মাঝি বেচারা হেসে বলতো ভালো মানিয়েছে
আমি তোমার দিকে তাকিয়ে ভাবতাম
পৃথিবীর সব শৈল্পিকতা তোমার মাঝে
সুন্দরের উপমা কেবল তোমাকে বোঝায়
তুমি স্বচ্ছতার প্রতিচ্ছবি
হঠাৎ নদীর একটা তীরে থামে নৌকা
দেখলাম কৃষকেরা শষ্য নিয়ে ব্যস্ত
অন্যদিকে দুটি যুগল আমাদের মতোন দাঁড়িয়ে ছিল
নদীর সাথে কথা বলে চুক্তি করছে প্রেম
হয়তোবা তারাও এখন প্রবীণ।
তোমার আমার পথটা কিন্তু এখনো মসৃণ
ভাবনাগুলো এখনো স্বপ্ন দেখে
রাতজাগা আমি তোমাকে নিয়ে আগের মতোই ভাবি
তুমি হাসনাহেনার মতোন আমার চার দেয়ালে সুগন্ধী দাও
গন্তব্যের আয়তক্ষেত্র দুকোনের দুটি মনের প্রেম চলে
তোমার পরশে এখনো পথ চলি
তোমার অগোচরে তোমাকে দেখি
সীমানাটা ধরে ধরে শক্ত রসিতে নির্ভর করি।
লেখক পরিচিতি : আমিরুল হাছান। কবি ও গীতিকার। জন্ম ১৫ জুন, নরসিংদীর ঘোড়াশালে। প্রকাশিত বই চারটি। সম্পাদনা করেছেন মুক্তিযুদ্ধের বইও। যোগাযোগ : hamirul186@gmail.com